আজকে ঋষি বঙ্কিম সরণীর উপর অবস্থিত শ্রীরামপুর জেলটি ১৮০৩ সালে ড্যানিশ প্রশাসন তৈরি করেন। ভারতে এটি ছিল ড্যানিশদের অধীনস্থ দ্বিতীয় কারাগার। ড্যানিশ উপনিবেশ শ্রীরামপুরে খুব বিশাল বড় কিছু না হলেও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য একটি কোর্টঘর এবং জেল বা কাছারীর (catcherie/cutchery) খুবই দরকার ছিল। বলে রাখা ভালো এই Catcherie শব্দটি এসেছে হিন্দী/বাংলার কাছারী শব্দ থেকে।
পাঁচিলে ঘেরা, এক বারান্দা, দু'টি ঘরের প্রথম জেলখানাটি ছিল খুব ছোট, এতটাই ছোট যে ১১,০০০ মানুষের শ্রীরামপুরের জন্যও কম পড়ছিল। জনসংখ্যাও বাড়ছিল। এর মধ্যে ১৮০১-১৮০২ সালে শ্রীরামপুর আসে ইংরেজদের দখলে। এই জেলবাড়িটি ভেঙ্গেচুরে একশা হয়ে যায়।
১৮০৩ সালে ড্যানিশরা আবার শ্রীরামপুরের দখল ফিরে পায় এবং নতুন জমি কিনে আজকের জেলটি গড়ে তোলে। ড্যানিশ ইঞ্জিনিয়ার মেজর B.A. von Wickede-এর তত্ত্বাবধানে এই জেলখানা প্রাঙ্গণটি গড়ে ওঠে। সেই সময়ে অত্যন্ত আধুনিকভাবে তৈরি এই কাছারী নিয়ে ড্যানিশদের গর্বের শেষ ছিল না। এখানে হিন্দু, মুসলমান, ভারতীয় খ্রীশ্চান এমনকী ইউরোপীয় কয়েদীদের জন্য আলাদা আলাদা ঘর করাছিল যাতে জেলের ভিতর সবাই নিজের মত করে সামাজিক এবং ধর্মীয় রীতিরেওয়াজ মেনে অপরাধী জীবন কাটাতে পারে।
১৮৪৫ সালে ড্যানিশরা যখন শ্রীরামপুর ছেড়ে যায়, ব্রিটিশরা এই জেলখানার ব্যবহার চালিয়ে যায়।
সামনের গেটটি বাদে ভিতরে বেশ কয়েকবার সংস্কার হয়েছে - ড্যানিশ আমলে ছাড়াও ব্রিটিশ অধীনে এমনকী ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও।
No comments:
Post a Comment