মাহেশের জননগর চার্চ
অনেকেই এখন চেনেন না, কিন্তু এই চার্চই ছিল প্রথম খ্রীষ্টান বাংলাভাষার প্রার্থনাগৃহ। অর্থাৎ এই চার্চে বসে বাংলাতেই প্রভুযীশুর প্রার্থনা করা যেত। ১৮২১ সালে তৈরি হওয়া এই জননগর ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পিছনেও ছিলেন উইলিয়ম কেরি এবং মূলত তাঁর সহকারী জন ক্লার্ক মার্শম্যান। জন ক্লার্ক মার্শম্যানের নাম থেকেই এই জায়গার নাম হয় জননগর। যেহেতু বাঙালী খ্রীষ্টানরা এই চার্চে এসে বাংলা ভাষাতে প্রভু যিশুর কাছে প্রার্থনা করতে পারতেন, একসময়ে খুবই জনপ্রিয় ছিল এই জননগর চার্চ। তবে এখন এই এলাকায় খ্রীষ্টান জনসংখ্যা বেশ কম। ফলে একদমই সাদামাটা এই চার্চ-এ প্রতি রবিবারে প্রেয়ার হয়৷
জননগর চার্চের ঠিক পাশেই আছে শ্রীরামপুর সাব-ডিভিশনাল স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন। স্বাধীনতার ঠিক পরেই ১৯৪৮ সালে এটি স্থাপিত হয়।
জননগর চার্চের রাস্তায় আপনি দেখে নিতে পারেন বাপুজি কেকের ফ্যাক্টরিটিও। হ্যাঁ, বাঙালির নস্টালজিয়া, ছেলেবেলার স্মৃতি-মাখা স্কুলের টিফিনের বাপুজি কেক। ১৯৭৩ সালে হাওড়ার ব্যবসায়ী অলোকেশ জানা 'নিউ হাওড়া বেকারি প্রাইভেট লিমিটেড নামে কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন করেন। প্রথম ইউনিট খোলেন হাওড়ার পল্লব পুকুর এলাকায়। পরে শ্রীরামপুর এবং লেকটাউনেও বেকারি চালু হয়।
Source: Internet |
এখন ব্যবসা দেখেন অলোকেশবাবুর দুই ছেলে অমিতাভ জানা এবং অনিমেষ জানা। ছেলেবেলার নস্টালজিয়া থেকে পথচলতি খুচরো খিদে - প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে "দামে কম মানে ভালো" বাপুজি কেক অনেক নামী কোম্পানিকে কুপোকাত করে এখনও বাজার মাতাচ্ছে।
১৯৩২ সালে স্থাপিত পরমেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়টিও দেখে রাখা উচিত। স্থাপত্য হিসেবে এই বাড়ীটি ব্রিটিশ স্থাপত্যকলা বহন করে বলে মনে হয়। মূল বাড়িটি সামনে থেকে চারটি থামের উপর দাঁড়িয়ে। মেনগেটের থামটিতে 'মহেশ, ১৩৩১ সাল' খোদাই করা। এর থেকে মনে হয় যে এই বিদ্যালয়টি ১৩৩১ সালে, অর্থাৎ ১৯২৪ সাল নাগাদ শুরু হলেও এখনকার বাড়িটি ১৯৩২ সালে তৈরি হয়।
প্রসঙ্গত শ্রীরামপুর অঞ্চলের সবথেকে পুরোনো স্কুল সম্ভবত ১৮৫১ সালে স্থাপিত মাহেশ বঙ্গ বিদ্যালয়। তবে সেই সময়ের বিদ্যালয় ভবন এখন আর দেখতে পাওয়া যায় না।
No comments:
Post a Comment