শ্রীরামপুরের চাতরার শীতলাপুজোও খুব বিখ্যাত। এখানে পূজিত হন শ্রীরামপুরের তিন মা - বড় মা, মেজ মা এবং ছোট মা। তিন মা-ই আসলে মা শীতলা।
প্রায় ২০০ বছর আগে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে বসন্ত রোগ এক সময় মহামারীর আকার ধারণ করেছিল শ্রীরামপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। স্বপ্নাদেশ পেয়ে সাধক রামদাস শুরু করেন শীতলা পুজো। প্রসন্ন হয়ে দেবী শ্রীরামপুর ও সংলগ্ন এলাকাবাসীকে রোগমুক্ত করেন। আজ ভক্তদের একাংশের কাছে তিনি শ্রীরামপুরের রানি মা। আবার কিছু ভক্তের কাছে তিনি বড় মা। ঐতিহাসিক সুধীরকুমার মিত্র মনে করেন, বাংলা সালের ১২৬০ এর দশক থেকে এখানে শীতলা দেবীর আরাধনা চলছে। বর্তমানে শীতলা এস্টেষ্ট এই মন্দির এবং পুজোর দেখভাল করে।
নবীনচন্দ্র চক্রবর্তী লেনে বড়মার মন্দির। এখানে ডাবের উপরে সিঁদুর লেপে রুপোর চোখ বসিয়ে সারা বছর মায়ের মন্দিরে পুজো হয়।
Location: Q87J+GR7, Nabin Chandra Chakraborty Ln, Chatra, Serampore, West Bengal 712204
কিন্তু প্রতি বছর ফাল্গুন-চৈত্র মাসে তিথি মেনে পাঁচ দিন ধরে চলে মায়ের মাটির প্রতিমার আরাধনা। দুর্গাপুজোর মতোই শুক্লা-অষ্টমীর দিন হয় মূল পুজো। টানাটানাচোখ, হলুদ গাত্রবর্ণ, চারপাশে সখী সোনার গয়নায় সেজে - অনেকটা সাবেকি দুর্গার ছবিই যেন দেখতে পাওয়া যায় এই মূর্তিতে। ঝাঁটা ও কলসী নিয়ে গাধার পিঠে বসে থাকা এই দেবীর মাথার অলঙ্কার হচ্ছে কুলা। ডাবের জল দিয়ে পুজো শুরু হয়, সপ্তমীতে রাত জেগে, উপোস করে অষ্টমী তিথিতে মন্দিরে মায়ের বেদিতে জল ঢেলে পুজো দিয়ে ব্রত ভাঙেন হাজার হাজার মানুষ। অনেকে দন্ডিও কাটেন। অষ্টমীর দিনে দেবীকে নিবেদন করা হয়, ঘিয়ে ভাজা লুচি, বিনা তেল-হলুদের, ঘি-শুকনো লঙ্কা ফোড়নের আলুর তরকারি। তরকারির স্বাদ অমৃতের সমান। সিঙ্গুর, বড়া, বেগমপুর, উত্তরপাড়া, বালি, ডোমজুড়, হাওড়া, বর্ধমান থেকেও হাজার হাজার ভক্ত এসে জড়ো হন এই পুজোয়। দশমীতে মাতৃপ্রতিমার বিসর্জন।
এই শীতলা পুজোকে কেন্দ্র করে এলাকায় বসে দেড় কিলোমিটার ব্যাপী বিরাট মেলা - দোকানে দোকানে বিক্রি হয় বাচ্চাদের খেলনা থেকে শুরু করে গৃহস্থালির জিনিস, মনোরঞ্জনের জন্য নাগরদোলা, খাবারের জন্য জিলিপি ফুচকা ইত্যাদি।
পটুয়াপাড়া লেনে রয়েছেন মেজ মা - উত্তরমুখী মন্দিরের গর্ভগৃহে উঁচু বেদীর উপর অবস্থান করছেন মেজ মা - শাড়ী পরিহিতা এবং সালঙ্কারা। মায়ের ডান দিকে ধূসর রঙের, ছয় হাত বিশিষ্ট,জ্বরাসুরের মূর্তি। বাঁদিকে রয়েছেন মা পদ্মাবতী অর্থাৎ মনসা দেবী। বাঁদিকে রয়েছেন মা পদ্মাবতী অর্থাৎ মনসা দেবী। এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা হরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য।
Location: P8WW+QM4, Patuapara Ln, Mahesh Colony, Serampore, West Bengal 712201
আর ছোট মা আছেন শেওড়াফুলিতে।
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা যাক যে হাওড়া এবং লিলুয়ার মাঝে সালকিয়াতেও এক জমজমাট শীতলা পুজো হয় - এখানে মা শীতলারা আবার সাত বোন।
পুরাণে শীতলাদেবীর কথা থাকলেও সহজ সরল লোককথাতেই শীতলা ঠাকুর যেন বেশি মহিমান্বিত। স্কন্দপুরাণ এবং ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে বলা হয়েছে বসন্তের দেবী শীতলাকে পুজো করলে গুটিবসন্তের প্রকোপ এড়ানো যায়। সময়ের সাথে সাথে কলেরা থেকে প্লেগ এবং যেকোন মহামারীর থেকে বাঁচার জন্য বাংলার মানুষ খুঁজে নিয়েছে মা শীতলার আশ্রয়। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনীর পাতা ছেড়ে ধর্ম-নির্বিশেষে মানুষ মা শীতলার আশ্রয় নিয়েছেন - তাই হিন্দুর কাছে তিঁনি শীতলা, মুসলিমদের কাছে বুড়াবুবু, বৌদ্ধের কাছে রোগব্যাধির প্রধান দেবী পর্ণ-শর্বরীর সঙ্গী হারীতি, আদিবাসীদের ‘বসন্তবুড়ি’, উত্তরভারতের পার্বতী, দক্ষিণের শীতলাম্মা ও চীনাদের কাছে ঊষা বলে পরিচিত। বাংলা ছাড়াও উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শীতলা পুজো করা হয়।
মা শীতলাকে নিয়ে অনেক গল্প শোনা যায়।
১) পৌরাণিক ইতিহাস বলে, যজ্ঞের আগুন থেকে শীতলা দেবীর জন্ম। স্বয়ং ব্রহ্মাও দেবীকে সমীহ করেন। শীতলাকে মূলত স্বাস্থ্যের দেবী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
২) আরেকটি পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, একসময় জ্বরাসুর নামে এক অসুর গোটা পৃথিবীতে দুরারোগ্য রোগ ছড়াচ্ছিল। সে যেখানেই যেত, সেখানকার বাচ্চাদের মধ্যে জ্বরের প্রকোপ দেখা দিত। দক্ষের যজ্ঞে শিবকে নিমন্ত্রণ না করায় তাঁর স্ত্রী সতী দুঃখে ভারাক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁর স্ত্রীর অস্বস্তি পর্যবেক্ষণ করে, শিবের তৃতীয় চোখের ঘামের একটি ফোঁটা থেকে বীভৎস জ্বরাসুরের উৎপত্তি। জ্বরাসুরের কারণে যখন আতঙ্ক ছড়িয়ে, তখন শিব ও পার্বতী জ্বরাসুরকে দমন করতে আবির্ভূত হন। মহাদেব ভৈরব রূপ ধারণ করে জ্বরাসুরের সঙ্গে যুদ্ধে করেন। অন্যদিকে, পার্বতী দেবী শীতলার রূপ নিয়ে মর্ত্যলোক শীতল করতে নেমে আসেন। নিজের হাতের পাত্র থেকে দেবী সর্বত্র শীতল জল ছড়িয়ে দেন এবং ঝাড়ু দিয়ে রোগ বহনকারী জীবাণু দূরে সরিয়ে দেন, রোগ মুক্তি ঘটান। পৌরাণিক ইতিহাস বলে, পার্বতী ঋষি কাত্যায়নের কন্যারূপে মর্তে অবতীর্ণ হন। বাবা কাত্যায়ন নিজের নাম অনুসারে তার নাম রাখেন কাত্যায়নী। শৈশব অবস্থা থেকেই কাত্যায়নী রোগ নিরাময় করতে শুরু করেন। এক সময় জ্বরাসুর তা জানতে পারে ও রেগে গিয়ে রোগের প্রকোপ আরও বাড়াতে থাকে। জ্বরাসুরের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাকে পরাস্ত করতে শিবকে অনুরোধ করেন কাত্যায়নী। শিব বটুক নামক এক যুবকের বেশে মর্ত্যে অবতীর্ণ হন। শুরু হয় বটুক ও জ্বরাসুরের মধ্যে যুদ্ধ এবং শেষে বটুক ত্রিশূল দিয়ে আঘাত করে জ্বরাসুরকে নিষ্ক্রিয় করে দেন। এই কাত্যায়নীই শীতলা নামে মানুষের রোগব্যাধি সারাতে থাকেন। পুরাণ অনুসারে শীতলা আদ্যাশক্তি দেবী দুর্গারই একটি রূপ।
৩) শিবের পরম ভক্ত রাজা বিরাট তাঁকে যথেষ্ট ভক্তি করতেন না, এই অপরাধে শীতলা তাঁর রাজ্যে নানা আধিব্যাধির এমন মহামারী লাগিয়ে দেন যে, রাজা শেষ পর্যন্ত নতিস্বীকার করেন। তিনি শীতলার করুণা ভিক্ষা করলে দেবীর মন গলে, বিরাটরাজ্য রোগমুক্ত হয়।
৪) বসন্ত ঋতুতে পৃথিবী পৃষ্ঠ উত্তপ্ত হতে শুরু করে। ভক্তদের বিশ্বাস, এই সময় দেবী নিজে গঙ্গায় স্নান করে নিজে যেমন শীতল হন তেমনই পৃথিবীর মাটিকেও শীতল বা ঠাণ্ডা করেন। তাই শীতলা পূজার সঙ্গে বৎসরান্তে স্নান যাত্রার একটি পর্ব রয়েছে।
৫) গ্রামবাংলায় বসন্ত রোগকে মায়ের দয়া বলা হয়। মনে করা হয় যে কেউ যখন হাম রোগে আক্রান্তিত হয়, তখন প্রকৃতপক্ষে তার মধ্যে ভগবান বিরাজ করে,তার ভেতর থেকে রোগটিকে পুড়িয়ে দেয়। দেবী তাদের মধ্যে উপস্থিতি ,তাই রোগী ঈশ্বরীয় অনুরূপ। মানুষের ধারণা রোগীর মধ্যে দেবী থাকায় রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হয়না, এটি একটি ঈশ্বরীয় কর্মের অনুরূপ। বহু জায়গায় আজও সংক্রমণটি কোন ঔষধ দ্বারা চিকিৎসা না করার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ এটি বিশ্বাস করা হয় যে, দেবী ৬-১০ দিনের মধ্যে দেহ ছেড়ে দেবেন।
৫) পুজোর দিন মা শীতলাকে বাসি অর্থাৎ আগের দিনের খাবার ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয়। তাঁর ভক্তরাও বাসি খাবার খেয়ে থাকেন, যা শীতল পান্তা হিসেবে পরিচিত। বলা হয় শীতলা পুজোর দিন উপবাস করে পুজো করলে ভক্তর বাড়িতে অর্থ ও খাবারের অভাব হয় না, ভক্তর পরিবার ও সন্তান সুস্থ থাকেন।
৬) বাংলায় দেবদেবীদের অনেক সময়ই মানুষের খুব কাছের করে নেওয়া হয়েছে, যেমন দুর্গা আপামর বাংলার মেয়ে উমা হিসেবেই বাঙ্গালীর কাছে আপনজন। পৌরাণিক রূপ ছাড়াও শবরদের পূজিত ছিলেন দেবী একথাও শোনা যায়। সেই দিক থেকে দেবী শীতলা কেমন যেন অনার্য-দের ঠাকুর।
সংস্কৃত শ্লোকে শীতলার বর্ণনা - নমামি শীতলাং দেবীং রাসভস্থাং দিগম্বরীং/ মার্জ্জনীকলসোপেতাং সূর্পালঙ্কৃতমস্তকাম্।। যার অর্থ - সেই দিগম্বরী শীতলা দেবীকে প্রণাম জানাই যিনি গাধার উপর বসে থাকেন, যিনি ঝাঁটা ও কলস শোভিতা, যাঁর মাথার অলংকার হল কুলো। কিন্তু বঙ্গশীতলা ছিলেন হস্তপদহীন, সিঁদুরলিপ্ত, শঙ্খ বা ধাতুখচিত ব্রণ-চিহ্নাঙ্কিত একটি মুখাবয়ব মাত্র।
গ্রামবাংলার শীতলাপুজোর রীতি কিন্তু রোগবিরোগ থেকে বাঁচার তাগিদেই। অনেক পরে আসে দেবীর মাতৃরূপ - গাধার পিঠে দেবী ত্রিনয়নী, গাত্রবর্ণ ফর্সা, পরনে নীল রঙের পোশাক ও চার হাত। চার হাতে যথাক্রমে একটি বাটি, পাখা, ঝাড়ু ও শীতল জলের পাত্র। ঝাড়ু জীবাণু ও ধূলিকণা পরিষ্কার করার জন্য এবং শীতল জল রোগ নিরাময়ের প্রতীক। শীতলার সঙ্গে এই সময় পুজো পান কলেরার দেবী ওলাদেবী, চর্মরোগের অধিষ্ঠাত্রী ঘেঁটু এবং রক্তের সংক্রমণজনিত রোগের সঙ্গে জড়িত রক্তদেবী।
কিছু জায়গায় চতুর্ভুজা শীতলা হয়েছেন দ্বিভুজা - এক হাতে ঝাঁটা ও অন্য হাতে বিষপাত্র। তিনিই একহাতে রোগ ছড়ান ও অন্য হাতে তা ঝাঁটা দিয়ে দূর করেন।
মনসামঙ্গলের মত শীতলামঙ্গল লেখা শুরু হয় প্রায় ১৬০০ শতকের শেষ দিকে - কবি বল্লভ, কৃষ্ণরাম দাস, কবি মানিকরাম গাঙ্গুলি, কবি নিত্যানন্দ চক্রবর্তী, দ্বিজ হরিদেব বা কবি জগন্নাথ - এঁরা সবাই বিভিন্ন সময়ে লিখেছেন শীতলামঙ্গলকাব্য।
শীতলা-মঙ্গলকবিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন কাশীজোড়ার রাজা রাজনারায়ণ রায়ের (১৭৫৬-১৭৭০) সভাকবি নিত্যানন্দ চক্রবর্তী। জন্ম মেদিনীপুরের কোলাঘাটের কাছে খয়রা কানাইচক গ্রামে। কবি বা পালাগানের বাইরে দ্বিজ নিত্যানন্দ ছিলেন কবিরাজও। তাঁর শীতলামঙ্গল কাব্যে উল্লেখ আছে চৌষট্টি ধরনের বসন্তরোগের কথা, সাথে পয়ার ত্রিপদী ছন্দে এই মারণ রোগের নানা ধরনের লক্ষণ এবং তার প্রতিকারের উপায়ও তিনি লিখেছেন এই পালাগানে।
শীতলামঙ্গল ছাড়াও তিনি লিখেছেন লক্ষ্মীর জাগরণ পালা, মনসামঙ্গল, রায়মঙ্গল, যমপালা, পাণ্ডবপূজা, ইন্দ্রপূজা, সীতাপূজা, জগন্নাথের পালা, পঞ্চ রায়ের পালাগান, পঞ্চানন্দের পালাগান, গোকুলপূজা পালা, শিবায়ন, তিলফুল পালা, কপিলামঙ্গল, বনদেবী বিশালক্ষীর গান, কালিকামঙ্গল, মদনমোহনের পালা, গঙ্গার পালাগান, বহিত্রমঙ্গল, কালুরায় মঙ্গল এবং ষষ্ঠীমঙ্গল পালাগুলি।
কাশীজোড়ার (আজকের পাঁশকুড়া) রাজারা মহাধুমধাম করে রাস উৎসব করতেন, সেখানে গিয়ে নিত্যানন্দ শীতলামঙ্গল শোনাতে গেলে রাজা রাজি হলেন না। কবি তখন পেছন দিকে মুখ করে গান শুরু করেন। কবির সুমধুর কণ্ঠের গান শুনে মন্দিরের দেবতা তাঁর দিকে মুখ ফেরান। অবাক রাজা কবিকে করলেন রাজকবি আর দিলেন কিছু জমি - ‘পঞ্চকুড়্যা জমি দিল কর্যা ব্রহ্মোত্তর।’
'নিত্যানন্দের লোককাব্য' গ্রন্থে ড. শ্যামল বেরা লিখেছেন যে শীতলামঙ্গলে আট পালায় আট রকম কাহিনির বিন্যাস রয়েছে। নিত্যানন্দ ছিলেন মূল গাহক। চামর নিয়ে আসরে গান গাইতেন। শীতলা মনসার গান যারা পরিবেশন করেন, হাওড়া মেদিনীপুর জেলায় সেসব দলকে বলা হয় 'শয়লার দল'। নিত্যানন্দ এ ধরনের দল পরিচালনা করতেন। গানের সঙ্গে নৃত্য, অভিনয় সবেতেই পারদর্শী ছিলেন কবি।
মজার ব্যাপার হল মনসার মতোই শীতলার গল্পটি কিন্তু একই রকম - পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে টপকে একজন প্রান্তিক লোকদেবীর মাহাত্ম্য প্রতিষ্ঠা পাওয়া। মেয়েদের দেবী হবার অধিকার লাভের জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হয়েছে যুগে যুগে।
শীতলা তাই স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নেমেছিলেন এলোচুলে, মারণরোগ ছড়িয়ে, অনুচর জ্বরাসুরকে নিয়ে। জ্বরাসুরের গায়ের রঙ ঘন নীল, তিনটি মাথা, নয়টি চোখ, ছয়টি হাত ও তিনটি পা । পাল যুগ থেকে বাংলায় শীতলা মূর্তির সঙ্গী হতে শুরু করে জ্বরাসুর। মানুষের দেহে জ্বর হয়ে প্রবেশ করে শিবভক্ত রাজা চন্দ্রকেতুর রাজ্যে ছড়িয়ে দিলেন সেই রোগ। নিজে রূপ নিলেন বৃদ্ধার - হাতে লাঠি, কাঁধে চৌষট্টি বসন্তের ঝুলি - তাতে পেলেন আরো তাচ্ছিল্য। প্রচণ্ড রেগে তিনি সমাজের আনাচেকানাচে আবাল-বৃদ্ধবনিতার মধ্যে ছড়াতে লাগলেন রোগব্যাধি। শেষে রাজপুত্রের রোগ সারিয়ে শীতলা ফিরলেন এবং পেলেন ভয়ে আকুল ভক্তকুলকে।
তবে মনসামঙ্গলের মত এত খ্যাতি কিন্তু পায়নি শীতলামঙ্গল - বাংলার গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে থাকা এই লোকগীতি বা পালাগানও চলে গেছিল একটু উপেক্ষায়। তবে ঝাড়গ্রামের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুব্রত মুখোপাধ্যায় অনেক গবেষণা করে লিপিবদ্ধ করেছেন এই লোকসংস্কৃতিকে তাঁর ‘শীতলামঙ্গল ও লোকসংস্কৃতি’ (Cult of Goddess Sitala in Bengal) - বইটিতে।
https://aakashbarta.com/শ্রীরামপুর-চাতরায়-শুরু/
https://drishtibhongi.in/2023/02/26/the-face-is-exactly-like-durga-two-centuries-old-shitala-puja-of-serampore/
No comments:
Post a Comment